এখনকার দিনে উন্নত টেকনোলজির কারণে কখন যে আপনার ডিভাইস বিপদের সম্মুখীন হবে আপনি তার টেরও পাবেন না।এমনকি আপনার সবচেয়ে ব্যবহৃত বিস্বস্ত অ্যাপ হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমেও আপনার ডিভাইসে গোপনে ঢুকে যেতে পারে সাংঘাতিক ম্যালওয়্যার।
তবে হোয়্যাটস স্প্যামকে চিনে মোবাইলকে রক্ষা করার কিছু উপায় আছে। এখন আলোচনা করা যাক সেই উপায়গুলো সম্বন্ধে।
১।ঘন ঘন ফরোয়ার্ড হওয়া মেসেজ
হোয়াটস অ্যাপ ব্যবহারকারীরা বিলক্ষন যানেন ফরোয়ার্ড করা মেসেজগুলো একজনের কাছ থেকে সহজেই একটি মাত্র ক্লিকে অন্যজনকে ফরোয়ার্ড করা যায়।কোনো মেসেজের মাথার দিকে ‘ফরোয়ার্ড’ শব্দটা লেখা থাকলে বুঝতে হবে যে মেসেজটি ফরোয়ার্ড করা হয়েছে।এছাড়াও মেসেজটি যদি পাঁচবারের ওপরে ফরোয়ার্ড করা হয়ে থাকে তাহলে মেসেজটিতে একটা ‘অ্যারো’-র বদলে থাকবে দুটি অ্যারোর চিহ্ন।সেটি দেখলেই বুঝে যেতে হবে সেই মেসেজটি ঘন ঘন ফরোয়ার্ড করার মেসেজের মধ্যে একটি।এই ধরনের মেসেজের মাধ্যমে হোয়াটস অ্যাপ স্প্যাম ঢুকে আসে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে।তাই যতটা সম্ভব এই মেসেজগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
২।অচেনা নাম্বার
হোয়াটস অ্যাপ, আপনার নাম্বার যাদের কাছে আছে তাদের সবাইকে আপনার ডিভাইসে মেসেজ পাঠানোর অনুমতি দেবে।অর্থাৎ হ্যাকারদের ক্ষেত্রে এই পথে আপনার ফোনে সাংঘাতিক ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়া খুবই সহজ।হ্যাকাররা ওয়েব থেকে আপনার কন্ট্যাক্ট ডিটেল পেয়ে যেতে পারে কিংবা ডার্ক ওয়েবের সাহায্য নিয়ে অ্যাক্টিভ নাম্বারের লিস্ট কিনে নিতে পারে যার মধ্যে থাকতে পারে আপনার নাম্বারও।একবার হ্যাকারদের হাতে ব্যবহারকারীর নাম্বার এসে গেলে তখন হোয়াটস অ্যাপ-এর মাধ্যমে সহজেই হ্যাকার ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ঢুকিয়ে দিতে পারবে বিপদজ্জনক ম্যালওয়্যার।
৩।স্ক্যাম এবং সন্দেহজনক লিঙ্ক
হ্যাকাররা লিঙ্ক ফরোয়ার্ডের মাধ্যমেও ক্ষতিকারক ভাইরাস ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করে।হোয়াটস অ্যাপে পাঠানো হ্যাকারদের লিঙ্ক-এ একবার যদি ব্যবহারকারী ক্লিক করে দেয় সাথে সাথে ব্যবহারকারীর সমস্ত গোপন তথ্য হস্তগত হবে হ্যাকারদের হাতে।তাই হোয়াটস অ্যাপে সন্দেহজনক অচেনা লিঙ্ক ক্লিক না করাই ভালো।
৪।লগ ইন কিংবা ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট
হোয়াটস অ্যাপের লিঙ্ক-এর ছদ্মবেশে হ্যাকাররা মাঝে মাঝে পাঠায় ফেক ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট।ব্যবহারকারী সেই ফাদে পড়ে একবার সেই রিকোয়েস্ট অ্যাক্সেপ্ট করে নেয়, তখনই সুযোগ পেয়ে সাংঘাতিক ভাইরাস ঢুকে যায় ব্যবহারকারীর ডিভাইসে।তাই এই ধরনের সন্দেহজনক ভেরিফিকেশন রিকোয়েস্ট আসলে সেইগুলোই এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
৫।শব্দের ফাঁদ
হোয়াটস অ্যাপ কর্তৃপক্ষের মতে স্প্যাম কিছু বিশেষ শব্দ কিংবা শব্দ সমষ্ঠির সাহায্য নেয় ব্যবহারকারীকে বোকা বানানোর জন্য।যেই শব্দ বা শব্দ সমষ্ঠি ব্যবহারকারীর এড়িয়ে চলা উচিত সেইগুলি হলো-
- হ্যাকারদের পাঠানো মেসেজে উল্লেখ থাকবে যেটি হোয়াটস অ্যাপ অ্যাফিলিয়েটেড মেসেজ।
- মেসেজের মধ্যে মেসেজ ফরোয়ার্ড করার নির্দেশ থাকবে।
- মেসেজে অ্যাকাউন্ট বন্ধের ভয় দেখানো হতে পারে।
- হ্যাকারদের পাঠানো মেসেজে ফরোয়ার্ডের ফলে গিফট পাওয়ার কথাও উল্লেখিত থাকতে পারে।
ব্যবহারকারী যদি ওপরের এই শব্দগুলো দ্বারা গঠিত কোনো মেসেজ পেয়ে থাকলে সেইগুলি তৎক্ষনাত ফোন থেকে ডিলিট করে দেওয়া উচিত।
হোয়াটস অ্যাপ স্প্যাম কমানোর উপায়
এখন এই প্রক্রিয়াগুলো অবলম্বন করে আপনি যদি হোয়াটস অ্যাপ স্প্যাম চিনেও নিতে পারেন, তাহলে পদক্ষেপ আপনার কি হওয়া উচিত?
১।অচেনা নাম্বার রিপোর্ট করুন
অচেনা নাম্বার থেকে হোয়াটস অ্যাপে সন্দেহ জনক মেসেজ এলে সেই নাম্বারকে সত্ত্বর রিপোর্ট করা প্রয়োজন।হোয়াটস অ্যাপ-এ কোনো নাম্বারকে ব্লক করতে হলে-
![](https://i1.wp.com/tukitech.in/wp-content/uploads/2020/10/whatsappuser-300x215.jpg?resize=300%2C215&ssl=1)
![](https://i1.wp.com/tukitech.in/wp-content/uploads/2020/10/whatsappuserclick-300x215.jpg?resize=300%2C215&ssl=1)
![](https://i1.wp.com/tukitech.in/wp-content/uploads/2020/10/whatsappscorll-300x215.jpg?resize=300%2C215&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/tukitech.in/wp-content/uploads/2020/10/whatsappblock-300x215.jpg?resize=300%2C215&ssl=1)
এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে সন্দেহজনক নাম্বারকে ব্যবহারকারী রিপোর্ট করতে পারেন।
২।অজানা/সন্দেহজনক নাম্বার কিংবা ব্যক্তিকে ব্লক করুন
অজানা কিংবা সন্দেহজনক ব্যক্তি এবং নাম্বারকে রিপোর্ট করার পর ব্লক করে ফেলুন।
রিপোর্ট করার নিয়মেই ব্লক করা সম্ভব হবে।শুধু লিস্টে গিয়ে ব্লক অপশনে ক্লিক করতে হবে।
৩।প্রাইভেসি বদলে ফেলুন
![](https://i2.wp.com/tukitech.in/wp-content/uploads/2020/10/1-575x1024.jpg?resize=575%2C1024&ssl=1)
হ্যাকারদের উপদ্রব আটকাতে হোয়াটস অ্যাপের প্রাইভেসি বদলে ফেলুন। হোয়াটসঅ্যাপে একটি প্রাইভেসি ফিচার আছে যার মাধ্যেমে ব্যবহারকারী নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন কারা কারা তাকে কোনো গ্রুপে অ্যাড করতে পারবে।সেটি ‘Everyone’, ‘My Contact’ এবং ‘My Contact Except’-এ বদলে ফেলুন।
উপরের আলোচনা করা এই উপায়গুলো অবলম্বন করে চিনে ফেলুন হোয়াটস অ্যাপ স্প্যাম এবং তাকে নিয়ন্ত্রনও করুন দক্ষতার সাথে।নিজের ডিভাইসকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে সচেতন থাকা প্রয়োজনীয়।
আপনার কি মনে হয় এই বিষয়ে?আপনার মতামত অবশ্যই আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে এবং লাইক ও শেয়ার করে পোস্টটিকে ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে।টেকনোলজি সম্বন্ধিত আরও খবর জানতে চোখ রাখুন টুকিটেকের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজে।