উচ্চমাধ্যমিকের পর বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করুন স্কলারশিপের সাহায্যে!জেনে নিন তার খুঁটিনাটি

0
407

উচ্চমাধ্যমিকের পর বিদেশে উচ্চশিক্ষা এর জন্য যাওয়ার ইচ্ছা অনেক শিক্ষার্থীরই থাকে।তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অর্থ হয়ে ওঠে প্রধান বাঁধা।তবে সেই বাঁধা অনায়াসেই দূর হয়ে যায় একটি উপযুক্ত স্কলারশিপ পেয়ে গেলেই।অনেকেই জানেন না শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়ার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা প্রচুর স্কলারশিপ প্রদান করার জন্য প্রস্তুত থাকে।শিক্ষার্থীদের শুধু নিজেদের যোগ্যতা প্রমান করে ছিনিয়ে নিতে হয় সেই সুযোগ আর তারপরেই কম খরচে কখনো বা নিখরচায় সামনে খুলে যায় বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের চমৎকার পথ।তবে এই স্কলারশিপ অর্জন করাও খুব একটা সহজ কাজ নয়।এর জন্য মেনে চলতে হয় কিছু নিয়ম।আজ সেই নিয়মগুলো নিয়েই করা হবে আলোচনা।

১। স্কলারশিপ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ লোকের থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে

চারপাশের অভিজ্ঞ লোকের থেকে সাহায্য চাইতে দ্বিধা বোধ করলে চলবে না।নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা বিদ্যালয়ের স্টাডি অ্যাব্রোড অফিসে, ফাইনানশিয়াল এইড অফিসে কিংবা বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইসরের সাথে কথা বলে জানতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো বিদেশে পড়ার স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে কিনা।
এতে শুধুমাত্র তারা সাহায্যের হাতই বাড়িয়ে দেয় না তার সাথে সাথে তারা শিক্ষার্থীর বিদেশে পড়ার ইচ্ছা ও লক্ষ্যের প্রতি দৃঢ়তা দেখে বেশ অভিভূতও হন।ফলে তারাও সাহায্য করতে বেশী আগ্রহী হয়ে যান এবং শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে তারাই মাঝে মাঝে বেশিরভাগ কাজটাই করে দেন।

২। বিভিন্ন স্কলারশিপ সম্বন্ধে বিস্তারিত রিসার্চ করা প্রয়োজন

শুধু মাত্র লোকের থেকে তথ্য সংগ্রহ করলেই হবে না, নিজেও স্কলারশিপ সম্বন্ধে বিস্তারিত রিসার্চ করা প্রয়োজন।বেশি স্কলারশপের জন্য অ্যাপ্লাই করলে বেশি আর্থিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ থাকে।বিভিন্ন ওয়েবসাইটেও কিছু কিছু স্কলারশিপের সন্ধান পাওয়া যায়।এছাড়াও স্কলারশিপ অনেক ধরনের হয়-
• লোকেশন নির্ধারিত স্কলারশিপ
• প্রোগ্রাম নির্ধারিত স্কলারশিপ
• বিষয় নির্ধারিত স্কলারশিপ
• শিক্ষার্থী নির্ধারিত স্কলারশিপ
• বিশ্ববিদ্যালয়-বিদ্যালয় দ্বারা প্রদত্ত স্কলারশিপ
• সংস্থা প্রদত্ত স্কলারশিপ
• সরকারি স্কলারশিপ
এই সমস্ত বিভিন্ন স্কলারশিপ সম্বন্ধে বিস্তারিত রিসার্চ করা অবশ্যই প্রয়োজন।

৩। স্কলারশিপ অথবা গ্র্যান্ট প্রদানকারী সংস্থার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে

স্কলারশিপ বা গ্র্যান্ট সম্বন্ধে সমস্ত পুঙ্খনাপুঙ্খ তথ্য যোগাড় করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো যেই সংস্থা স্কলারশিপ প্রদান করছে তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা।এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় তথ্য একদম সঠিক ভাবে পেতে সক্ষম হবে।

৪। নিজের রিজিউমে-কে সঠিকভাবে বানাতে হবে

স্কলারশিপ সমন্ধিত সমস্ত রিসার্চ ও যোগাযোগ করে নেওয়ার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হল নিজের রিজিউমেকে সঠিকভাবে তৈরী করা।স্কলারশিপ আবেদনকারীর যদি কোনো বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে তা অবশ্যই রিজিউমে-তে সংযোগ করা প্রয়োজন।এছাড়াও আবেদনকারীর সমস্ত কাজকর্ম রিজিউমে-তে উল্লেখ করা দরকার।আবার এও খেয়াল রাখতে হবে যেন রিজিউমে কখনোই এক পৃষ্ঠার বেশি না হয়ে যায়। এছাড়াও রিজিউমের সাথে একটি ভালো কভার লেটার যুক্ত করে দেওয়া প্রয়োজনীয়।

৫। নিজের যোগাযোগকে কাজে লাগাতে হবে

বেশিরভাগ বিদেশে শিক্ষার জন্য স্কলারশিপগুলোতে সুপারিশ চিঠি যুক্ত করার প্রয়োজন পড়ে।সেই রেকমেন্ডেশন লেটার যোগাড় করার একটাই উপায় সেটি হলো নিজের যোগাযোগকে কাজে লাগানো।কোনো কর্তৃপক্ষ কিংবা কোনো অধ্যাপক যদি আপনার চেনা শোনার মধ্যে থাকে তবে তাদের কাছে সুপারিশ চিঠি অর্থাৎ রেকমেন্ডেশন লেটারের জন্য আবেদন করতে পারেন।

৬। ক্যালেন্ডার মেনটেন করতে হবে

যেহেতু অনেকগুলো স্কলারশিপের জন্য একসাথে অবেদন করা হচ্ছে তার জন্য অবশ্যই একটি ক্যালেন্ডার মেনটেন করা জরুরি।ক্যালেন্ডারে প্রত্যেকটি স্কলারশিপের ডেডলাইন দাগানো থাকলে সমস্ত ব্যাপারটা সিস্টেমেটিকালি মেনটেন করা যাবে।

৭। একনাগাড়ে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে যেতে হবে

আবেদনের কাজটি ভীষণ পরিশ্রম সাধ্য লাগলেও হার না মেনে একনাগাড়ে বিভিন্ন জায়াগা খুঁজে খুঁজে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে যেতে হবে।বিদেশে পড়তে যাওয়ার সবচেয়ে কঠিন অধ্যাত হল এই স্কলারশিপ অর্জন করা।

৮।সবকটা অ্যাপ্লিকেশনকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে

যেহেতু একসাথে একাধিক স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা হচ্ছে সেইজন্য কোনো কোনো অ্যাপ্লিকেশনকে কম গুরুত্ব দিয়ে করার কথা মাথাতেই আসতে পারে।তবে সেটি করা একেবারেই ঠিক হবে না।এটা সবসময় মাথাতে রাখতে হবে যে স্কলারশিপ পাওয়া মোটেও সহজ নয় তাই প্রত্যেকটি স্কলারশিপের অবেদনই গুরুত্বপূর্ণ।

৯।পরীক্ষায় ভাল নম্বর তোলা জরুরি

যদিও এমন অনেক স্কলারশিপ আছে যারা পরীক্ষার নম্বরের ওপর বিশেষ জোড় দেয় না তবে বেশীরভাগ স্কলারশিপ-ই পরীক্ষার নম্বরের ওপরে বিবেচনা করে হয়।সাধারনত যেই সংস্থা স্কলারশিপ প্রদান করছে তারা পরীক্ষার নম্বর যাচাই করে দেখতে চান তারা তাদের অর্থ সঠিক আবেদনকারীর ওপর খরচ করতে চলেছেন কিনা।

১০। লেখার মাধ্যমে নিজের ইচ্ছাকে প্রমান করতে হবে

স্কলারশিপের প্রত্যেকটি আবেদনপত্রে নিজের সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ লিখতে হয়।সেই প্রবন্ধকেই করতে হবে প্রধান অস্ত্র।সেই প্রবন্ধে নিজের ইচ্ছা,বিদেশে পড়ার অদম্য আগ্রহ এবং সেই শিক্ষাকে নিজের জীবনে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যকে ভীষণ ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে।যাতে স্কলারশিপ প্রদানকারী সংস্থা এই প্রবন্ধ পড়েই বুঝতে পেরে যায় যে তারা তাদের অর্থ সঠিক এবং যোগ্য শিক্ষার্থীর ওপরেই বিনিয়োগ করছেন।

সবশেষে মনে রাখতে হবে বিদেশে পড়ার জন্য স্কলারশিপের আবেদনগুলি সমান গুরুত্ব দিয়ে অবশ্যই করতে হবে।সবসময় মনে রাখতে হবে লক্ষ্য স্থির থাকলে এবং প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকলে সব স্বপ্নই পূরণ করা সহজ হয়ে যায়।শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহসটুকু প্রয়োজন।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে প্রস্তুতি,পরামর্শ ও অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় জানতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে।

আজ আলোচনা করা হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ বৃত্তান্ত নিয়ে।

এই সংক্রান্ত আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পোস্টটিকে লাইক ও শেয়ার করুন এবং এই সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন যদি আপনাদের মনে আসে নিঃসংকোচে আমাদের জানান ফেসবুক কমেন্টের মাধ্যমে।

আরও পড়ুনঃ Algorithmic Designএর দক্ষতাযুক্ত ব্যক্তিই বর্তমানে সমস্ত কোম্পানির মূল চাহিদা!

Leave a Reply