ভারতীয় শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া কী উপযুক্ত? জেনে নিন বিস্তারিত!

0
430

ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র হিসাবে অস্ট্রেলিয়া বেশ জনপ্রিয়।অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রত্যেক বছর ভারতীয় শিক্ষার্থীদের তরফ থেকে আসে সবথেকে বেশী উচ্চশিক্ষার আবেদন।অস্ট্রেলিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য খ্যাত তার উচ্চমানের শিক্ষার জন্য, সেই দেশের উৎকৃষ্ট মানের সংস্কৃতির জন্য এবং বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগের জন্য।

উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ? 

২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়াতে সর্বোচ্চ সংখ্যক উচ্চশিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আবেদন পত্র জমা পড়েছিল।অস্ট্রেলিয়ার উন্নতমানের শিক্ষার পরিকাঠামোর জন্যই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র হিসাবে ছাত্র-ছাত্রীরা অস্ট্রেলিয়াকে বেছে নেয়।অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষার পরিকাঠামো যেমন ভালো সেইরকমই উচ্চশিক্ষার পরবর্তী কর্মক্ষেত্র হিসাবেও এই দেশে সুযোগ আছে প্রচুর।

তবে অস্ট্রেলিয়াকে নিজের উচ্চশিক্ষার স্থান হিসাবে বেছে নেওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে জেনে নেওয়া উচিত।

অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাক্ষেত্রে কী কী কোর্স এবং প্রোগ্রাম আছে?  

অস্ট্রেলিয়ায় অনেক ধরনের বিষয়ের ওপর উচ্চশিক্ষার কোর্স করার সুযোগ পাওয়া যায়।একজন ভারতীয় শিক্ষার্থী বিনা কষ্টে সহজেই উচ্চশিক্ষার জন্য তার পছন্দ মতো বিষয় বেছে নিতে পারে।এই দেশে আছে ১১০০টির ওপরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সেই সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২২,০০০টি বিষয় পড়ানো হয়।একজন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে একটি সুযোগ্য ও সফল জীবন নির্বাহিত করার জন্য উপযুক্ত শিক্ষা লাভ করতে পারে এই দেশ থেকে।অবশ্য বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এই দেশে অ্যাকাউন্টিং, আইটি, হেলথ কেয়ার, হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং বিজনেস ম্যানেজমেন্ট-এর বিষয়েই পড়তে আসে।

অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার খরচা কীরকম?

উন্নতমানের শিক্ষার পরিকাঠামোর জন্য অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশোনার খরচও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশী ব্যয়বহুল।এখানে টিউশন খরচ এবং স্টুডেন্ট লোনের পরিমানও একটু বেশী।একটি সার্ভেতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার টিউশন ফি বাবদ খরচ পড়ে ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১০ লাখ  থেকে ২০ লাখ টাকার  মধ্যে।যদিও কোন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার কোর্স করা হবে তার ওপরও নির্ভর করে টিউশন ফি-এর মূল্যের হেরফের হয়।

স্কলারশিপ

পড়াশোনার খরচ বেশী হওয়া সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে ভালো উচ্চশিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্র কারণ অস্ট্রেলিয়ার স্কলারশিপের সুযোগ সুবিধার জন্য।একটি ভালো স্কলারশিপের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন আরও সহজ হয়ে যায়।আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যে যে স্কলারশিপ আছে তার কয়েকটি সরকার প্রদত্ত এবং কয়েকটি আবার কিছু কিছু নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব যেমন মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের মেলবোর্ন রিসার্চ স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে।তাই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার সময় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কি ধরনের স্কলারশিপ প্রদান করে এই বিষয়টি দেখে নেওয়া উচিত।

অন্যান্য খরচ   

অস্ট্রেলিয়াতে উচ্চশিক্ষার স্বপ্নের দিকে এগোনোর সময় এটাও মাথায় রাখতে হবে পড়াশোনার খরচ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়াতে থাকতে হলে থাকার খরচ, খাওয়ার খরচ, ফোন, যাতায়াত, বিনোদন ইত্যাদি অন্যান্য খরচও আছে।সবসময় মনে রাখতে হবে বড়ো শহরে থাকলে খরচের পরিমানও হবে বেশী তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল, গেস্টহাউস ইত্যাদিতে থাকলে সেই তুলনায় খরচের পরিমান হবে কম।এছাড়াও অনেক ধরনের ওয়েবসাইট আছে যারা শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য থাকা-খাওয়ার ওপর নানা রকমের ডিসকাউন্ট কুপন অফার করে, সেই দিকেও শিক্ষার্থীদের খেয়াল রাখার প্রয়োজন।

অস্ট্রেলিয়ান গ্র্যাজুয়েটের কর্মক্ষেত্রে বেতন কীরকম মেলে?

একটি সার্ভেতে দেখা গেছে যেসব শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে গ্র্যাজুয়েট করে বেরিয়েছেন তাদের কর্মক্ষেত্রে বার্ষিক বেতন শুরু হয় ভারতীয় মূল্যে ২৬ লাখ টাকা থেকে।এছাড়াও কোনো শিক্ষার্থীর যদি নেটওয়ার্কিং ও কমিউনিকেশন স্কিল ভালো থাকে তাহলে সে তার পক্ষে কর্মক্ষেত্রে আরো উন্নতি করা সম্ভব।

অস্ট্রেলিয়াতে পড়ার সুবিধা

দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়াতে শিক্ষাগ্রহনের ক্ষেত্রে কী কী সুবিধা আছে।

  • আন্তর্জাতিক লেভেলে আত্মপরিচয় ঘটানোর সুযোগ।
  • বিবিধ সামাজিক সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকে।
  • এটি রিজিউমেকে আরও উপযুক্ত করে তুলবে।
  • উন্নতমানের শিক্ষার সুযোগ
  • আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার প্রদত্ত স্কলারশিপের সুবিধা।
  • সারাবিশ্বের সাথে যোগাযোগের রাস্তা উন্মুক্ত হয়।
  • পড়াশোনা চালানোর সাথে সাথে আছে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের সুযোগ।
  • ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকে শিক্ষা পরবর্তী কাজের ভিসা।
  • গ্র্যাজুয়েশনের পর আন্তর্জাতিক মানের কেরিয়ারের সুযোগ।
  • অস্ট্রেলিয়াতে একটি স্থায়ী কাজ পেয়ে গেলে পাওয়া যায় স্থায়ী বাসস্থানের অনুমতি।
  • এছাড়াও থাকে বিদেশে ঘোরার সুযোগ।

অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির যোগাযোগ আছে সারা বিশ্বের সাথে তাই কোর্স চলাকালীন প্রয়োজনের খাতিরে  বিশ্ববিদ্যালয় বদল করাও সহজ হয়ে যায়।তবে অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা অর্জন একটু খরচ সাপেক্ষ হলেও শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কেরিয়ারের মোড় ঘোরানোর জন্য এটি উপযুক্ত।

আপনার কি মনে হয়?আপনার মতামত অবশ্যই আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে এবং লাইক ও শেয়ার করে পোস্টটিকে ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে।টেকনোলজি সম্বন্ধিত আরও খবর জানতে চোখ রাখুন টুকিটেকের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। 

Leave a Reply