30 উপায়ে নামমাত্র বিনিয়োগে এখন বাড়ি থেকেই হোক ব্যবসা!

0
477

অনেকেরই অফিসের বাধা-ধরা নিয়মে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটার জীবন অপচ্ছন্দের।নিজের নিয়মের ব্যবসা করার স্বপ্ন অনেকেই দেখেন ।কিন্তু স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার উপায় না খুঁজে পাওয়ায় সেই স্বপ্ন হারিয়ে যাচ্ছে।সাধারণত ব্যবসা শুরু না করতে পারার কারণ বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দাঁড়ায় বিনিয়োগের সমস্যা, না হয় জায়গার সমস্যা।সেই সমস্যা সমাধানের জন্যই আজকের পোস্টে আলোচনা করা হবে নামমাত্র বিনিয়োগে বাড়ি থেকে করা যায় এমন তিরিশটি ব্যবসা সম্বন্ধে।

Contents hide

১। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং

ঘরে বসে করার মতো ব্যবসায়িক ধারনা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় নেটওয়ার্ক মার্কেটিং-এর।এটি সম্পূর্ণ শূন্য বিনিয়োগের পার্ট টাইম ব্যবসা।এই ব্যবসায় এক নেটওয়ার্কিং কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করতে হয় তার বদলে ওই কোম্পানির থেকে পাওয়া যায় কমিশন।এই ব্যবসায় সফলতা নির্ভর করে ব্যবসায়ীর কথা বলার দক্ষতা ও যোগাযোগ ক্ষমতা বাড়ানোর দক্ষতার ওপর।

২।ইনস্যুরেন্স এজেন্সি 

ইনস্যুরেন্স এজেন্ট হিসাবেও পার্ট টাইম ব্যবসা করা যায়।ইনস্যুরেন্স কোম্পানির হয়ে ক্রেতাদের ইনস্যুরেন্স বেচতে পারলেই কোম্পানির তরফ থেকে কমিশন পাওয়া যায়।

৩।হোমমেড চকোলেট বানানো

হোমমেড চকোলেট বানানো একটি ভীষন ভালো ব্যবসায়ীক উপায়।চকোলেট সবসময়েই সবার পছন্দের বস্তু আর সেটি যদি বাড়ীতে বানানো কেমিক্যাল বিহীন হয় তাহলে তার চাহিদার পরিমান আরও বেড়ে যায়।তাই বাড়িতে বসে চকোলেট তৈরী করে অনায়াসেই অর্থ উপার্জন সম্ভব।

৪।কাস্টোমাইজড গিফট স্টোর

এখন অনেকেই নিজের প্রিয়জনকে তার নিজের নাম লেখা কিংবা প্রিয় ছবি প্রিন্ট করা উপহার দিতে পছন্দ করে।কাস্টোমাইজড গিফট স্টোর সেই সব মানুষদের চাহিদা সহজেই পূরণ করতে পারবে সাথে একটি সফল ব্যবসা হিসাবেও দাঁড়িয়ে যাবে।

৫।হোম বেকারি

অনেকেই বাড়িতে কেক, কুকিস, পাউরুটি ইত্যাদি বানাতে পছন্দ করেন।এই পছন্দের কাজের দ্বারাই সহজে উপার্জন করা যায় যথেষ্ট পরিমান অর্থ।এলাকার দোকান গুলোর সাথে যোগাযোগ করে কিংবা অনলাইনে নিজের বিজ্ঞাপন দিয়ে কাস্টমারদের সরবরাহ করতে পারেন ফ্রেশ হোম-বেকড খাদ্য।

৬।মোমোবাতি বানানো

ঘর সাজানোর উপকরনের মধ্যে মোমবাতি একটি খুব সুন্দর জিনিস।আর মোমোবাতি বানানোর কাজে যদি আপনি সিদ্ধহস্ত হন তবে এই কাজ করেই আপনি উপার্জন করতে পারেন যথেষ্ট পরিমানে অর্থ।

৭।পাপড় এবং আঁচারের ব্যবসা

আঁচার এবং পাপড় অতীব মুখরোচক খাদ্য পদার্থ এবং এটি প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই নিত্য প্রয়োজনে লাগে।আপনি যদি পাপড় এবং আঁচার বানাতে সিদ্ধহস্ত হন তাহলে আপনার চেনাজানা আত্মীয় এবং পাড়ার দোকানে সেইগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

৮।ব্যবহৃত বইয়ের দোকান

বইয়ের দোকান কখনোই বিফলে যায় না।অনেক শিক্ষার্থী পুরনো এডিশনের বই-এর জন্য কিংবা কম দামের জন্য পুরনো বই কিনতে পছন্দ করে।তাই পুরনো বইয়ের ব্যবসা করেও অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

৯।ডিটার্জেন্ট বানানো

ছোটোবেলায় অনেক স্কুলেই হোম সায়েন্সে শেখানো হয় ডিটার্জেন্ট বানানোর পদ্ধতি।ছোটোবেলার শেখা সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ডিটার্জেন্ট বানিয়েও সহজেই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

১০।টিফিন ব্যবসা

রান্নায় সিদ্ধহস্ত ব্যক্তিদের জন্য এই ব্যবসা একদম উপযুক্ত।এখন অনেক মানুষই তাড়াহুড়োর কারনে নিজের টিফিন বানানোর সময় পায় না তারা তখন বাইরে থেকে টিফিন অর্ডার করার দিকেই ঝোঁকে।এি ধরনের মানুষদের টিফিন যোগান দিয়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

১১।জিনিসপত্র সারানোর কাজ  

অনেকেই ঘরের ছোটোখাটো জিনিস সারানোর কাজে দক্ষ হন।তাদের সেই দক্ষতার সদব্যবহার করে সহজেই অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।

১২।শিক্ষার্থীদের পড়ানো

টিউশন ক্লাস নেওয়া হল সবচেয়ে ভালো পার্ট টাইম ব্যবসা।আর এই ব্যবসা শুধু আজকের নয় বহু যুগ ধরে চলে এসেছে।এই ব্যবসায় অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দান করা হয়।অনেকেই এই পেশাকে শুধু পার্ট টাইম হিসাবে নয় পুরোপুরি পেশা হিসাবেই গ্রহণ করেছে।

১৩।অ্যাকাউন্টিং সার্ভিস

বাড়ীতে বসে ব্যবসার আরেকটি উপায় হলো অ্যাকাউন্টিং সার্ভিস।তবে এই ব্যবসা করতে গেলে অ্যাকাউন্টিং এবং তার সাথে জড়িত সফটওয়্যার সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।বেশীরভাগ ছোটো-বড়ো সংস্থা নিজেদের অ্যাকাউন্ট সামলানোর জন্য লোক নিযুক্ত করে থাকে।

১৪।ম্যাট্রিমোনিয়াল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা

বর্তমানযুগে মানুষ প্যাকেজের পরিষেবার দিকে ঝুঁকেছে বেশী।তাই ম্যাট্রিমোনিয়াল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য উপার্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ। ক্যাটারিং থেকে ফোটোগ্রাফার, ডেকোরেশন থেকে কনের মেকআপ সমস্ত কিছুর পরিষেবা প্রদান করুন একটি প্যাকেজের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে। বিবাহের মরসুমে এই ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত।

১৫।মোবাইল/কম্পিউটার সারাই করার কাজ

বাড়িতে থেকে অন্যের মোবাইল কম্পিউটার অর্থের বিনিময়ে সারিয়ে দেওয়ায় একটি ভালো ব্যবসার উপায়।তবে এই ব্যবসার জন্য এই কাজে বিস্তর জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

১৬।বিউটি পার্লার

মেক-আপ সম্বন্ধে যদি আপনার বিস্তর জ্ঞান থাকে এবং হাতের কাজ যদি আপনার বেশ ভালো হয় তবে বিউটি পার্লার হতে পারে আপনার অর্থ উপার্জনের পথ।তবে এই কাজে দক্ষতা থাকলেও কিছু প্রফেশনাল কোর্স করে রাখা ভালো।

১৭।রিয়েল এস্টেট এজেন্সি

রিয়েল এস্টেট এজেন্সি হলো এমন একটি ব্যবসা যার মাধ্যমে আপনি ক্রেতাকে বাড়ি কিনতে কিংবা বেচতে সাহায্য করতে পারেন অর্থের বিনিময়ে।এই ব্যবসায় সফলতার হার প্রচুর।

১৮।ট্রাভেল এজেন্সি

‘বাঙালীর উঠলো বাই তো কটক যাই’ এই প্রবাদেই বাঙালীর ঘুরতে যাওয়ার নেশার বর্ণনা স্পষ্ট বলা আছে।ট্রাভেল এজেন্সি অর্থের বিনিময়ে বাঙালীর এই ঘুরতে যাওয়ার স্বপ্নকেই পূরণ করতে সাহায্য করে।

১৯।যোগা ইন্সট্রাকটর

এই যুগের একটি নতুন কেরিয়ার-এর দিক হলো যোগা ইন্সট্রাকট্রর হওয়া।কয়েকটি যোগা কোর্স করে নিলে আপনিও হয়ে যেতে পারেন যোগা ইন্সট্রাকটর।একবার ভালো ভাবে যোগা শিখে গেলে আপনিও বাড়িতে যোগা ক্লাস নেওয়া শুরু করে দিতে পারেন।

২০।ইভেন্ট প্ল্যানার

এই ব্যবসায় ইভেন্ট প্ল্যানারকে বড় বড় ইভেন্ট বা প্রোগ্রাম প্ল্যান করতে হয় এবং সেইগুলোকে ভালোমতো করে পরিচালিত করতে হয়।যদি আপনার ভালো ম্যানেজমেন্ট ও প্ল্যানিং-এর ওপর দক্ষতা থাকে তবে আপনিও এই কাজ সহজে করতে পারবেন।

২১।ফ্রিলান্সিং

অনলাইন ব্যবসার কথা বলতে গেলে তালিকার সর্বপ্রথমেই আসে ফ্রিলান্সিং।এই কাজে অনলাইনে কোনো কোম্পানির প্রজেক্ট করে দিলে তার ওপর অর্থ মেলে।

২২।ব্লগিং

আরেকটি জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসা হলো ব্লগিং।নিজের একটি অনলাইন ব্লগ তৈরী করে সেখানে কোনো বিষয়ের ওপর আকর্ষনীয় কন্টেন্ট পোস্ট করতে হবে।ব্লগ একবার জনপ্রিয় হয়ে গেলে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করা যাবে।

২৩।অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসা।এই ব্যবসায় অ্যাফিলিয়েট কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে তার থেকে কমিশন পাওয়া যায় এবং অর্থ উপার্জন করা যায়।হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক কিংবা নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব।

২৪।ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ হলো অনলাইনের মাধ্যমে ইমেল পাঠানো, ডকুমেন্ট টাইপ করা, ডেটা এন্ট্রি ইত্যাদির মতো অফিসের কাজ বাড়িতে বসে অর্থের বিনিময়ে করে দেওয়া।এই কাজে ঘন্টা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে।

২৫।অনলাইন কনসালটেন্সি

বাড়িতে বসে অনলাইনে ব্যবসার আরেকটি উপায় হলো অনলাইন কনসালটেন্সি।তার জন্য নিজের অনলাইন কনসালটেন্সির ওয়েবসাইট বানাতে হবে।নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলে কাস্টমাররা বেশী আকর্ষিত হয়।

২৬।এসইও কনসালটেন্সি

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এখনকার সবচেয়ে বেশী চাহিদাযোগ্য ব্যবসা।এখনকার দিনে বিভিন্ন ওয়েবমাস্টার এবং ওয়েবসাইট-এর মালিকরা ভালো এসইও সার্ভিস-এর ওপর ভালো অর্থ ব্যয় করতে ইচ্ছুক।

২৭।ইউটিউব চ্যানেল

নিজের ইউটিউবের চ্যানেল তৈরী করে অর্থ উপার্জন করা যায়।এই পথে অর্থ উপার্জন করতে হলে একটি ভালো মানের ক্যামেরা এবং ভিডিও এডিটিং-এর জন্য একটি ভালো সফটওয়্যার ব্যবহার করা প্রয়োজন।

২৮।অনলাইন কোর্স এবং অনলাইন শিক্ষকতা

এই ব্যবসা একজন শিক্ষিত ব্যক্তি অনায়াসেই করতে পারেন।এখন বিভিন্ন এডুকেশনাল অ্যাপে অনলাইন এডুকেটরের মাধ্যমে পড়ানো হয়।সেইসব অ্যাপে আপনিও আপনার যোগ্যতা প্রমান করে এডুকেটর হওয়া সম্ভব।

২৯।অনলাইন ই-কমার্স স্টোর

অনলাইন ই-কমার্স স্টোরে মানুষ নিজেদের প্রোডাক্ট কেনা-বেচা করতে সক্ষম হন।তবে এই ব্যবসায় একটু বেশী পরিমান বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং একটি টিম গঠনেরও প্রয়োজন পরে।

৩০।কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং একটি পার্টটাইম ঘরে বসে করার মতো ব্যবসায়ীক উপায়।অনেক ব্লগারস এবং ওয়েবসাইট-এর মালিক অর্থের বিনিময়ে কন্টেন্ট রাইটারের খোঁজ করে।

ওপরের এই তিরিশটি ব্যবসায়ীক উপায়ের মাধ্যমে আপনিও সহজে বাড়িতে বসে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন।

আপনার কি মনে হয়?আপনার মতামত অবশ্যই আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে এবং লাইক ও শেয়ার করে পোস্টটিকে ছড়িয়ে দিন সকলের মাঝে।টেকনোলজি সম্বন্ধিত আরও খবর জানতে চোখ রাখুন টুকিটেকের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। 

Leave a Reply